NRS Medical College: সরকারি হাসপাতাল নিয়ে নানান রকম ছুতমার্গ,অভিযোগ থাকে। বেসরকারি হলেই নাকি শুধু পরিষেবা ভালো হয়। অন্তত তেমনটাই বলে থাকেন নীতি বাগিসরা। কিন্তু তারপরেও সমাজের পিছিয়ে পড়া দরিদ্র শ্রেণীর মানুষ ভরসা করেন এই সরকারই হাসপাতালকেই। সরকারি হাসপাতাল যে চিকিৎসা ক্ষেত্রে কতটা সর্বোত্তম হতে পারে তার প্রমাণ দিল পশ্চিমবঙ্গের নীলরতন সরকার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল (NRS Medical College)। সাড়ে সতেরো কোটির ওষুধ দেওয়া হল সম্পূর্ণ বিনামূল্যে। চিকিৎসার এক্সিলেনস এবং মানবতার ভিত্তি স্থাপন করল এনআরএস। ওষুধের দাম ১৭.৫ কোটি টাকা। সেই বিদেশী ওষুধ বিনামূল্যে দেওয়া হয়েছে হাসপাতাল থেকে। এই প্রথমবার পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কলেজে এরকম ওষুধের সরবরাহ এবং এই বিরল রোগের চিকিৎসা করা হলো।
রোগের নাম স্পেইনাল মাসকুলার এট্রফি। গত বছর আগস্ট মাসে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে এই রোগের চিকিৎসা করা হয়। তবে সেই চিকিৎসা বিফল হয়ে যায়। এক ছোট বাচ্চার উপরে এই রোগের কোপ পড়ে। কিন্তু ঠিক কি হয়েছিল বাচ্চাটির। বিশেষজ্ঞরা বলছেন এটি একটি অত্যন্ত বিরল রোগ। ৫০০ জনের মধ্যে তিনজন এই রোগে ভোগেন। মোটর নিউরনের উপর প্রভাব ফেলে এই রোগ। এই স্নায়ু কোষ মানুষের স্বাভাবিক পেশীকে সক্রিয় রাখে। সেই স্নায়ু থাকে শিরদাঁড়ায়। এই রোগের ফলে স্নায়ু ছোট এবং দুর্বল হয়ে যায়।
আমেরিকার একটি বিখ্যাত মেডিসিন ব্র্যান্ডের তথ্য অনুযায়ী, শিশুরাই বেশি ক্ষেত্রে আক্রান্ত হয় এই রোগে। এই রোগ আসলে জিনগত। এই রোগ এতটাই প্রাণঘাতী হতে পারে যে পাঁচ বছর বয়স পর্যন্ত টিকে থাকা মুশকিল। বুদ্ধিমত্তার উপর যদিও এর কোন প্রভাব পড়ে না। বরং এই ধরনের শিশুরা অত্যন্ত বুদ্ধিদীপ্ত হয়ে থাকেন। এতে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা কিভাবে হয়? এই রোগে আক্রান্ত হয়েছিল হাওড়ার শ্যামপুরের একটি শিশু! তার চিকিৎসার জন্য বিশ্বের অন্যতম দামি ওষুধ ব্যবহার করা হয়েছে এন আর এস হাসপাতাল থেকে।
যার দাম ১৭.৫ কোটি টাকা! সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এই ওষুধ দিয়েছে হাসপাতাল! ওই খুদের বাবা জানিয়েছেন, ছেলের বয়স ৬ মাস তখন এই রোগ ধরা পড়ে! চিকিৎসকরা জিন থেরাপির চেষ্টা চালিয়েছিলেন। এতদিন যা যা ওষুধ দেওয়া হয়েছে সবটাই বিনামূল্যে। এনআরএস হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং চিকিৎসকদের করজোড়ে প্রণাম জানিয়েছেন ওই শিশুর মা এবং বাবা। সেই সঙ্গে সরকারি হাসপাতালের এমন অসাধারণ চিকিৎসা পরিষেবার কথা শুনে ধন্য ধন্য করছে আপামর মানুষ।