UPSC: আমাদের দেশে সরকারি বিভিন্ন পদে নিয়োগের জন্য বিভিন্ন পরীক্ষা নেওয়া হয়,সেইসমস্ত পরীক্ষার মধ্যে অন্যতম কঠিন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা হল UPSC। লাখ লাখ ছাত্র-ছাত্রীর স্বপ্ন থাকে এই পরীক্ষায় সফল হয়ে দেশের অন্যতম পদ আইপিএস কিংবা আইএএস হওয়ার। গায়ে উর্দি চাপিয়ে দেশসেবার কাজে নিজেকে নিয়োজিত হওয়ার মধ্যে যেমন জড়িয়ে থাকে নিজের গর্ব, তারই সাথে কিন্তু জুড়ে থাকে ওই ব্যক্তির সাফল্যের আড়ালে থাকা সংগ্রামের ইতিহাসও।
এমন অনেকেই রয়েছেন তারা আবার তাদের প্রচুর টাকা বেতনের চাকরি ছেড়ে এসেও UPSC পাশ করে এই পেশায় যুক্ত হতে চান,ঠিক এই ধরনের স্বপ্ন ই দেখেছিলেন আশনা চৌধুরী (Aashna Chaudhury)। পর পর তিনবার পরীক্ষা দেওয়ার পর UPSC তে পাশ করেন তিনি। প্রথম দুবারের ব্যর্থতার পর আর থেমে থাকেননি তিনি, হেরে গেলেও হারিয়ে যাননি তিনি। আজকের এই প্রতিবেদনে আমরা তাঁর জীবনের সংগ্রামের কাহিনি নিয়েই আলোচনা করতে চলেছি।
আশনার জন্ম উত্তরপ্রদেশের পিখুয়া শহরে।আশনার বাবা একটি সরকারি কলেজে অধ্যাপনা করেন এবং মা একজন গৃহকর্ত্রী হয়েও পড়াশোনা আর সমাজসেবামূলক কাজে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। পিখুয়া শহরেই সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুলে প্রাথমিকভাবে পড়াশোনা শুরু করেন তিনি,এর পর উদয়পুরে সেন্ট মেরিজ স্কুল এবং তার পর গাজিয়াবাদে দিল্লি পাবলিক স্কুলে পড়াশোনা করেন তিনি। আশনা উচ্চমাধ্যমিকে ৯৬.৫ শতাংশ নম্বর পেয়েছিলেন ।
উচ্চমাধ্যমিক পাশের পর উচ্চতর শিক্ষার জন্য দিল্লিতে লেডি শ্রীরাম কলেজ এ ভর্তি হন তিনি।সেখান থেকেই স্নাতক উত্তীর্ণ হন আশনা চৌধুরী। এরপর ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনস বিষয় নিয়ে সাউথ এশিয়ান ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি।পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে যুক্ত হয়ে প্রান্তিক দুস্থ শিশুদের সাহায্যও করতেন।
View this post on Instagram
২০১৯ সালে প্রথমবারের মত তাঁর বাবা-মা তাঁকে UPSC পরীক্ষার জন্য উৎসাহিত করেন।সেই উৎসাহ থেকেই ২০২০ সালে প্রথমবার এই পরীক্ষায় বসেন আশনা, কিন্তু প্রিলিমসও পাশ করতে পারেননি তিনি।ব্যর্থতার হতাশা কাটিয়ে ২০২১ সালে আবারও একবার পরীক্ষায় বসেন তিনি। কিন্তু এবারেও প্রিলিমস উত্তীর্ণ হতে পারেননি আশনা।এরপর আত্মবিশ্বাস ক্রমশ কমতে শুরু করে। কিন্তু, তারপরেও হাল ছাড়েননি আশনা।কঠিন পরিশ্রম আর নিষ্ঠায় ২০২২ সালে আবারও পরীক্ষায় বসেন আর এবারে প্রিলিমিস পাশ করে আনন্দে উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন তিনি। বাকি ছিল মেনস পরীক্ষা।
ওই বছরই মেনস পরীক্ষায় ১০ লক্ষ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১১৬ র্যাঙ্ক অধিকার করে UPSC পাশ করেন আশনা চৌধুরী।এরপর আইপিএস হিসাবে কর্মে যোগ দেন তিনি।আশনা বলেন, ‘স্বপ্নকে ছেড়ে দিও না কখনও। ব্যর্থতায় জীবন শেষ হয় না, কিন্তু তা সাফল্যের পথে একটা সিঁড়ির মত কাজ করে। নিজের ভুলভ্রান্তি থেকে শিক্ষা নাও, এগিয়ে চল। নিজের উপর ভরসা রাখাটা সবার আগে দরকার। আবেগ আর নিষ্ঠা দিয়ে দিনরাত কাজ করো। সাফল্য তোমার পিছু পিছু আসবেই।’
আরও পড়ুন: UPSC: শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে হারিয়ে হুইল চেয়ারে বসেই UPSC লক্ষ্যভেদ কার্তিকের