UPSC: সঙ্গীত কালিয়া হরিয়ানার ভিওয়ানি জেলার বাসিন্দা সঙ্গীতার বাবা ধর্মপাল ছিলেন পেশায় ছুতোর মিস্ত্রী। ফতেহাবাদের একটি থানায় তিনি ঠিকাদারি কাঠের কাজ করতেন। নিম্ন মধ্যবিত্তের কন্যা তিনি। তাঁর বাবার আগাগোড়াই ইচ্ছা ছিল মেয়েকে পুলিশ অফিসার বানানোর। পড়াশোনায় মেধাবী সঙ্গীতা স্কুলের পড়াশোনা শেষ করেই আইপিএস হওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেন। ২০০৫ সালে ইউপিএসসিতে বসেন। সফল হননি। একের পর এক সরকারি-বেসরকারি চাকরির সুযোগ ফেরাতে থাকেন। এ ভাবে ৬টি চাকরির সুযোগ স্বেচ্ছায় ছেড়ে দেন সঙ্গীতা। ২০০৯ সালে ইউপিএসসিতে সাফল্য আসে।
Success Story Of UPSC Sangeeta Kalia:
যেই বছর সঙ্গীতার বাবা ফতেহাবাদের থানা থেকে অবসর নেন। অদ্ভুত ভাবে সঙ্গীতাও নিজের কর্মজীবন শুরু করেন সেই ফতেহাবাদের পুলিশ সুপার হয়ে। তবে আইপিএস হওয়ার পর তার পথ খুব একটা মসৃণ ছিল না অনেক বাঁধার মুখে পড়তে হয়েছে তাকে তবে কোনো কিছু তেই তিনি মাথানত করেননি। ২০১৬ সালে তখন সঙ্গীতা হরিয়ানার ফতেহাবাদের দায়িত্বে। মদের চোরাচালান নিয়ে সে সময় উত্তাল হরিয়ানার রাজনীতি। ওই বিষয়েই মন্ত্রী অনিল ভিজের সঙ্গে বৈঠক ছিল সঙ্গীতার। মন্ত্রী বলেছিলেন, পুলিশ চোরাচালানকারীদের রক্ষাকবচের কাজ করছে। মিথ্যে দোষারোপ সহ্য করতে না পেরে মুখের উপর উত্তর দেন সঙ্গীত সেই নিয়ে মন্ত্রীর সাথে কথা কাটাকাটি লেগে যায়। অনিল টোকন ছিলেন হরিয়ানার স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
সঙ্গীতা অবশ্য পাল্টা মন্ত্রীকে বলেছিলেন, তাঁর পুলিশ অপরাধীদের গ্রেফতার করছে। আড়াই হাজার মামলাও দায়ের করেছে। কিন্তু কোনও অজানা শক্তি বলে একের পর এক অপরাধী জেল থেকে জামিনে ছাড়া পেয়ে যাচ্ছে। তারপর কিছু দিনের মধ্যেই তাঁকে অন্যত্র বদলি করে দেওয়া হয়।বদলি হয়ে পানীপতে আসেন সঙ্গীতা। ২০১৮ সালের ৩০ জুন পানীপতে একটি বৈঠক ডেকেছিলেন অনিল। সঙ্গীতা তখন পানীপতের পুলিশ সুপার। সঙ্গীতা-সহ আট জন পুলিশ কর্তা ওই বৈঠকে যোগ দেননি। ক্ষিপ্ত অনিল সঙ্গীতার নামে নালিশ করেন হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। পাঁচ দিনের মাথায় ফের বদলি। প্রথম ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাটেলিয়নের দায়িত্ব দিয়ে পানীপত থেকে তাঁকে গুরুগ্রামের ভোন্ডসিতে সরিয়ে দেওয়া হয়।
সঙ্গীতার বদলি বারবার হওয়াতেও দমে যাননি, নিজের সততা ও সাহসকে হাতিয়ার করে এগিয়ে গেছেন মাত্র ৩১বছর বয়সী আইপিএস অফিসার। তিনি তীক্ষ্ণ দৃষ্টসম্পন্ন, একবার ডাকলেই ঘটনার আঁচ পায়ে যান। সঙ্গীতার সহকর্মীরা বলেন, বরাবর সাহসী এই পুলিশ কর্তা কখনও চাপের মুখে মাথা নোয়াননি। তবে তার মাসুলও দিতে হয়েছে। বদলি হয়েছেন বারংবার। কিন্তু তারপরও তাঁকে দমিয়ে দেওয়া যায়নি। এক জায়গায় চেপে বসানো হলে, অন্যত্র মাথা তুলেছেন। বর্তমানে রেলপুলিশের সুপার হিসেবে কর্মরত তিনি।