জীবনে সাফল্য অর্জন করতে গেলে কঠোর পরিশ্রম আর নিজের লক্ষ্যকে স্থির রেখে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারলেই দেখা যাবে কোনো বাঁধাই বাঁধা নয়। UPSC পরীক্ষার প্রতিযোগিতা যেখানে পর্বত সমান সেখানে সাফল্য পেতে গেলে, যে কঠোর পরিশ্রমের দরকার তা আর আলাদা করে কিছু বলার নেই। তাই জীবনে সফল হতে হলে কঠোর পরিশ্রমই হলো একমাত্র চাবিকাঠি।
সেই সঙ্গে মনের মধ্যে অদম্য জেদ ও কঠোর পরিশ্রম এই দুইয়ে মিলে এনে দিতে পারে আপনাকে সফলতা। সেখানে কোনো আর্থিক প্রতিকূলতা কিংবা শারীরিক প্রতিকূলতা কখনোই পিছুটান হয়ে দাঁড়াতে পারেনা। কেবলমাত্র নিজের লক্ষ্যে অবিচল থাকতে পারলেই ছিনিয়ে নেওয়া যায় সাফল্য। আর এই ঘটনা এরআগে অনেকেই বহুবার প্রমাণ করেছেন। আর এবারে সেই তালিয়ায় নাম অন্তর্ভুক্ত করলেন, আইএএস অফিসার মহম্মদ আলি সিহাবের (Mohammad Ali Shihab)। আজকের এই প্রতিবেদনে তাঁরই জীবন যুদ্ধের বাস্তব চিত্র তুলে ধরা হলো।
1980 সালের 18 মার্চ কেরলের মলপ্পুরম নামের এক প্রত্যন্ত গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন, মহম্মদ আলি সিহাব। ছোটবেলা থেকেই দারিদ্রতা তাঁদের নিত্যসঙ্গী। এমনকি তিনি ছোটো থেকেই সংসারের কাজে হাত লাগাতে, তাঁর বাবার সঙ্গে বাবার সঙ্গে কখনো বিক্রি করতেন বাঁশের তৈরি ঝুড়ি আবার কখনো পান ফেরি করে বেড়াতেন। আর এই ভাবেই চলতো তাঁদের সংসার। কিন্তু তবুও তিনি হাল ছেড়ে দেননি কখনও। আর তার সঙ্গে সঙ্গেই চালিয়ে গেছেন পড়াশোনা। তবে এরপর তাঁদের পরিবারের আর্থিক অবস্থা আরো খারাপ হয়ে যায়, তাঁর বাবার মৃত্যুর হলে।
জানা গেছে, পাঁচ ভাই বোনের পেট চালানোর তথা গোটা পরিবারের দায়িত্ব এসে পড়ে তাঁর মায়ের ওপর। এমন অনেক দিনই কেটেছে, যখন না খেয়ে কাটাতে হয়েছে দিনের পর দিন। তারপর একদিন বাধ্য হয়েই তাঁর মা নিজের সন্তানদের কোঝিকোর নামক একটি অনাথ আশ্রমে রেখে আসেন। আর এরপরই শুরু হয় এক নতুন যুদ্ধ। 10 বছর আশ্রমে থাকতে থাকতেই তিনি নিজের লক্ষ্য স্থির করে ফেলেছিলেন। ভবিষ্যতে তিনি একজন আইএএস অফিসার হবেন।
সূত্রের খবর, এরপর থেকেই তিনি শুরু করেছিলেন ইউ পি এস সি- র প্রস্তুতি। তবে প্রস্তুতি নিলেও সাফল্য অর্জন করতে তাঁকে তিন তিনবার এই পরীক্ষায় বসতে হয়েছিলো। আর তারপরেই সাফল্য অর্জন করতে সক্ষম হন তিনি। এবং সেখানে সমস্ত পরীক্ষার্থীকে পেছনে ফেলে দিয়ে 226 নম্বর স্থান অধিকার করেন সারা ভারত মিলিয়ে। বর্তমানে তিনি নাগাল্যান্ডের কোহিমার একজন আইএস অফিসার। তাঁর এই সফলতার গল্পটি অনুপ্রেরণা যোগাবে হাজারো পড়ুয়ার।
Comments are closed.